Chole Jay Boshenter Din by Humayun Ahmed/ চলে যায় বসন্তের দিন/হুমায়ুন আহমেদ ^ বই মেলা

Chole Jay Boshenter Din by Humayun Ahmed/ চলে যায় বসন্তের দিন/হুমায়ুন আহমেদ

চলে যায় বসন্তের দিন। নায়ক হিমু। বরাবরের মত এখানেও হিমু তার চারপাশের পরিবেশকে ঘোলাটে রাখতে সক্ষম হযেছে। হুমায়ূন আহমেদ এর বেশিরভাগ উপন্যাসগুলো আমাদের মনে নির্মল আনন্দের সৃষ্টি করে। কিন্তু আমি তার উপন্যাসগুলো পড়তে গিয়ে দেখেছি তার উপন্যাসগুলোতে একই জিনিসের বার বার আগমন হচ্ছে। লেখক হিসাবে তার মান কতটা উচু পর্যায়ে তার হিসাব করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আমি তার অন্যান্য হিমু বিষয়ক রচনা থেকে এই রচনাটি কোনভাবেই আলাদা করতে চাচ্ছি না। আমি তার উপন্যাসে কোন নতুনত্ব না পাওয়াই মর্মাহত হয়েছি। এখানে বলে রাখা ভালো আমার বয়স খুবই কম এবং আমার উপন্যাস এ হাতে খরি মাস দুয়েক আগে। এর মাঝে আমি হুমায়ূন আহমদের যে বইগুলো পড়েছি তা পড়ে প্রথমে খুব আশান্বিত হলেও বর্তমানে আমি মর্মাহত। আমি তার কাছে আরো নতুন কিছু আশা করি। চলে যায় বসন্তের দিন উপন্যাসটি আরো ভালো করা যেত। কিন্তু তিনি কেন যে বার বার একই ধরনের ঘটনা তুলে আনছেন তা আমি কিছুতেই অনুমান করতে পারছি না। তার উপন্যাসের গল্পের বিষয় বস্তু খুবই সাধারন, কিন্তু তিনি সেই সাধারন থেকেই অসাধারন গল্প সৃষ্টি করতে পারেন যা আমরা প্রায় সকলেই জানি। কিন্তু সব সময় একই ধাচের লেখায় আমাদের মন অনিহা প্রকাশ করে বসে। খাবার যত ভালোই হোক না কেন প্রতিদিন একই খাবার খেলে একসময় আর সেটা মুখে দিতেই ইচ্ছা করে না। তখন মনে হয় এর থেকে খারাপ খাবার খেলেও বোধ হয় ভালো হত, পেট ভরে খেতে পারতাম। আমার মতে তাকে উপন্যাসের উপর আরো মনযোগ দিতে হবে যাতে তার উপন্যাসগুলো আরো সুন্দর এবং আকর্ষনীয় হয় এবং নতুনত্ব থাকে। বিশেষ করে হিমু বিষয়ক উপন্যাসগুলো, কারন আমার প্রিয় চরিত্রগুলোর মধ্যে হিমু অন্যতম।

এখন উপন্যাসের দিকে আলোকপাত করা যাক। উপন্যাসটি একটি সাধারন ঘটনার মাধ্যমে শুরু হয়েছে এবং হিমুর আত্মাধিক ক্ষমতার মাধ্যমে তা বিকশিত হযেছে। সাধারনত হিমুর উপন্যাস যেভাবে শুরু হয় এখানেও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। একটি দীর্ঘ্য চিঠির বদলে এখানে শুরু হয়েছে একটি সাধারন আকৃতির চিঠির মাধ্যমে। চিঠির সাথে পাচশ টাকার নোট। মাজেদা খালার চিঠি লেখার একটা স্টাইল। এই উপন্যাসে হিমু যার সমস্যা নিয়ে কাজ করছে তার নাম জহির। মাজেদা খালার ছেলে। খুব ভালো ছাত্র। হুমায়ূন আহমেদ এর আর একটি চরিত্র বাদলের ফটকপি। যা আমার খুবই অপছন্দ। সে হঠাৎ করে একটি মেয়েকে ভালোবেসে ফেলে। মেয়ের নাম ফুলফুলিয়া। কিন্তু বাংলা ছবির চিরায়ত দৃশ্যের মত জহিরের মা-বাবা কেউ তাতে রাজি নেই। কিন্তু তাতে কি উপন্যাসের প্রধান চরিত্র যেখানে হিমু সেখানে কারো বিয়ে কিভাবে আটকে থাকবে(তার তার নিজেরটা বাদে)। সুতরাং যথারিতী হিমু তার অলৈকিক ক্ষমতার প্রকাশ শুরু করে দেয় এবং আপনারা যারা হিমুর দু তিনটা বই পড়েছেন তাদেরকে আর বাকিটুকু বলার তেমন প্রয়োজন মনে করছি না । কারন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি , তবে প্রত্যেকবার আলাদা আলাদা ভাবে। অনেকটা একই স্থানে যাওয়া কিন্তু বিভিন্ন পথে যাবার মত। শেষে কি হবে আমরা সবাই বুঝতে পারি কিন্তু কোন পথে যাচ্ছি তা অচেনা। যখন আমাদের গন্তব্য আমরা যেনে যাই এবং দেখতে পাই গন্তব্য স্থল আমাদের সকলের চিরচেনা তখন গন্তব্যস্থানে পৌছানোর আগ্রহ কার কতটুকু থাকে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যাহোক শেষ পর্যন্ত হিমু তাদের দুজনের বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলে কিন্তু তার নিজের গন্তব্য হয়ে পড়ে অজানা। সামনে তার কি অপেক্ষা করছে তা সে জানে না।
Image and video hosting by TinyPic
চলে যায় বসন্তের দিন